স্বামী নিত্যাত্মানন্দের(জগবন্ধু মহারাজ) লেখা শ্রীম-দর্শনের ষোলটি খন্ডে বারবার উল্লেখিত হয়েছে মর্টন স্কুল - swami vivekananda

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

Sunday, July 8, 2018

demo-image

স্বামী নিত্যাত্মানন্দের(জগবন্ধু মহারাজ) লেখা শ্রীম-দর্শনের ষোলটি খন্ডে বারবার উল্লেখিত হয়েছে মর্টন স্কুল

Responsive Ads Here
স্বামী নিত্যাত্মানন্দের(জগবন্ধু মহারাজ) লেখা শ্রীম-দর্শনের ষোলটি খন্ডে বারবার উল্লেখিত হয়েছে মর্টন স্কুল।এই বাড়ির চারতলার সিঁড়ির ঘরে মাষ্টার মশাইয়ের দীর্ঘজীবনের বহু ইতিহাস নিঃশব্দে রচিত হয়েছে।এই স্কুলটি মাষ্টার মশাই 1905 সালে ন'কড়ি ঘোষের ছেলের কাছ থেকে ক্রয় করেন এবং প্রতিষ্ঠানটি সরিয়ে আনেন 50 নম্বর আমহার্স্ট স্ট্রিটের এই লাল বাড়িতে।পরে মাষ্টার মশাই এই স্কুলটি বিক্রি করে দেন।নতুন নাম হিন্দু একাডেমী।মাষ্টার মশাই মর্টন স্কুলের রেক্টর ছিলেন।

মাষ্টার মশাইয়ের বাসভবন ছিল গুরুপ্রসাদ চৌধুরী লেনে।নাম দিয়েছিলেন ঠাকুরবাড়ি।মাষ্টার মশাইয়ের বড় স্বপ্ন ছিল গৃহত্যাগী সন্ন্যাসী হইবেন।কিন্তু ঠাকুর কখনোই অনুমতি দেন নাই।চোখের সামনে দেখেছেন ঠাকুর বিবাহিত কয়েকজনকে সন্ন্যাস গ্রহনের অনুমতি দিলেন।যেমন যোগিন মহারাজ, তারক মহারাজ, রাখাল মহারাজ এঁদেরকে।কিন্তু মাষ্টার মশাইকে ঠাকুর অনুমতি দিলেন না।উল্টে ঠাকুর বলিতেছেন, তোমাকে একটু মায়ের কাজ করতে হবে।নাহলে সংসারীদের কাছে মায়ের কথা কে বলবে।জীবনের শেষ প্রান্তে এসে জগবন্ধু বাবুর কাছে হাঁউমাউ করে কেঁদে কেঁদে মাষ্টারমশাই বলেছিলেন,--
ঠাকুর একদিন বললেন (দক্ষিণ হস্তের বৃদ্ধাংগুষ্ঠ ও তর্জনী একত্র করিয়া) তোমাকে একটু মায়ের কাজ করতে হবে।আমি তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী পঞ্চাশ বছর ধরে তাঁর কাজ করে চলেছি, কিন্তু এখনো ছুটি মিলছে না।সন্ন্যাসের প্রসঙ্গে ভক্তদের কাছে মাষ্টার মশাই বলতেন, -- হাটে সিঁদুর নেই, না অভাগীর কপাল নেই?

যাইহোক, মনে বড় আশা ছিল, সাধু হইবেন, দ্বারে দ্বারে মাধুকরী করিবেন।কিন্তু সংসারীর মাধুকরী নিষিদ্ধ।তাই ছুটির দিনে মাধুকরীর ভাব লইয়া মর্টন স্কুল থেকে পায়ে হেঁটে দীনহীন বেশে ভিখারীর মতো গুরুপ্রসাদ চৌধুরী লেনের নিজ বাড়িতেই (ঠাকুর বাড়ি) গিয়ে উপস্থিত হইতেন।যেন এক সাধু গৃহস্থ বাড়িতে অন্নসেবার জন্য উপস্থিত হইলেন।অনেক পরে গিন্নীমা (নিকুঞ্জদেবী) বুঝতে পেরে একটা চাকরের ব্যবস্থা করেন।ঠাকুর বলতেন,-- ভিক্ষান্ন হলো বড় শুদ্ধ অন্ন।মাষ্টার মশাই তাই ভিক্ষান্নের জন্য মঠে যাইতেন।চায়ের চামচের এক চামচ অন্নভোগ গ্রহণ করতেন।
মাষ্টার মশাইয়ের প্রসাদ গ্রহনের কৌশলও দেখার মত ছিল।হাত ধুয়ে ভিজা হাত মাথায় মুছিতেন, তার পর প্রসাদ গ্রহন করিয়া হাত ধুয়ে জল খেতেন।পার্শবর্তী ভক্তকে বলিতেন,-- লঙ্কা না জেনে খেলেও ঝাল লাগে।অবিশ্বাসে প্রসাদ খেলেও প্রেম ভক্তি হয়।
তীব্র বৈরাগ্যবান ছেলেদের ঠাকুর বলতেন, --গাছতলায় পড়ে থাকবি আর তাঁকে ডাকবি।এই কথাটি মাষ্টার মশাইয়ের মনে খুব দাগ কেটে ছিল।একদিন গভীর রাতে মাষ্টার মশাই শুধু একটা কম্বল নিয়ে কলকাতার রাস্তায় বেরিয়ে এসে ছিলেন।ফুটপাথে ভিখারীদের সঙ্গে কম্বল পেতে শুয়ে পড়েন।উদ্দেশ্য ছিল, এমন পরিবেশে ঈশ্বর অনুভূতি অনুভব করা।রাতের নৈশপ্রহরীর সন্দেহ হওয়ায় তিনি স্থানীয় থানা থেকে পুলিশ ডেকে আনেন।সৌভাগ্যক্রমে ওদের কেউ মাষ্টার মশাইকে চিনতে পারে এবং ঠাকুরের কৃপায় সে যাত্রায় মাষ্টার মশাই রক্ষা পান।(জ-য়-ঠা-কু-র)।

স্বামী নিত্যাত্মানন্দ রচিত " শ্রীম দর্শন " গ্রন্থ হইতে সংগৃহীত ও সংকলিত করা হয়েছে।

Post Bottom Ad

Pages