একদিন নরেন্দ্রনাথ তাঁর গুরুভাইদের সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর থেকে কলকাতায় ফিরছেন ৷ কথা উঠল ঠাকুরের সম্বন্ধে কার কি ধারণা ? কেউ বলছে—অপূর্ব জ্ঞান, কেউ বলছে—অসাধারণ ভক্তি ৷ এরকম নানা জনের নানারকম মন্তব্য হচ্ছে ৷ নরেন্দ্রনাথ চুপ করে আছেন ৷ তখন অনেকে তাঁকে বললে—তুমি কি বল? - swami vivekananda

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Thursday, July 12, 2018

একদিন নরেন্দ্রনাথ তাঁর গুরুভাইদের সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর থেকে কলকাতায় ফিরছেন ৷ কথা উঠল ঠাকুরের সম্বন্ধে কার কি ধারণা ? কেউ বলছে—অপূর্ব জ্ঞান, কেউ বলছে—অসাধারণ ভক্তি ৷ এরকম নানা জনের নানারকম মন্তব্য হচ্ছে ৷ নরেন্দ্রনাথ চুপ করে আছেন ৷ তখন অনেকে তাঁকে বললে—তুমি কি বল?

একদিন নরেন্দ্রনাথ তাঁর গুরুভাইদের সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর থেকে কলকাতায় ফিরছেন ৷ কথা উঠল ঠাকুরের সম্বন্ধে কার কি ধারণা ? কেউ বলছে—অপূর্ব জ্ঞান, কেউ বলছে—অসাধারণ ভক্তি ৷ এরকম নানা জনের নানারকম মন্তব্য হচ্ছে ৷ নরেন্দ্রনাথ চুপ করে আছেন ৷ তখন অনেকে তাঁকে বললে—তুমি কি বল?
 স্বামীজী উত্তরে বললেন—L-O-V-E personified—প্রেমের মূর্তবিগ্রহ ৷ ঠাকুরকে তিনি এইভাবে দেখেছেন ৷ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর সম্বন্ধ ছিল অদ্ভুত ৷ ঠাকুরের কাছে তিনি যে আত্মসমর্পণ করেছেন তা একদিনে নয় ৷ ঠাকুরের সঙ্গে তিনি অনেক দ্বন্দ্ব করেছেন, বলেছেন—তাঁর সঙ্গে এমন লড়াই বোধহয় আর কেউ করেনি ! পদে পদে তিনি ঠাকুরের কথার প্রতিবাদ করেছেন, তর্ক করেছেন,  আর বলেছেন—প্রতিবারই হারতে হয়েছে ৷ যে-ঠাকুর লেখাপড়া জানতেন না, শিষ্ট সমাজে চলার উপযুক্ত কি না সন্দেহ—তাঁর কাছে স্বামীজী বারবার পরাভূত ৷ কেন ? কারণ, ঠাকুরের যে অপূর্ব শক্তি, তার কাছে কে না পরাস্ত হয় !
কাশীপুরে মহাসমাধির আগে তিনি নরেন্দ্রনাথকে তাঁর সমস্ত আধ্যাত্মিক শক্তি সমর্পণ করলেন ৷ স্বামীজী অনুভব করেছিলেন ঠাকুরের দেহ থেকে তড়িৎকম্পনের মতো সূক্ষ্ম তেজোরশ্মি তাঁর দেহমধ্যে প্রবেশ করছে ৷ তিনি বাহ্যজ্ঞান হারালেন  ৷ চেতনা লাভ করে তিনি দেখলেন ঠাকুরের চক্ষে অশ্রুবর্ষন হচ্ছে ৷ তাতে অতীব চমৎকৃত হয়ে এরূপ করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে ঠাকুর বললেন," আজ যথাসর্বস্ব তোকে দিয়ে ফকির হলুম ৷ তুই এই শক্তিতে জগতের কাজ করবি ৷ কাজ শেষ হলে পরে ফিরে যাবি ৷"
ঠাকুরের অশ্রুবর্ষন দুঃখে নয়— এ আনন্দাশ্রু ৷ তিনি এমন একজন উত্তরাধিকারীকে পেয়েছেন, যার ওপর তাঁর জগদুদ্ধারকার্যের যে আদর্শ, তাকে রূপায়িত করার দায়িত্ব দেওয়া হয় ৷ এই শক্তিমান ব্যক্তিই তাঁর পতাকা বহন করে চারদিকে নিয়ে যাবেন, বিশ্বজয় করবেন ৷
স্বামীজী ধর্মজীবনকে নতুনভাবে আমাদের কাছে পরিবেশন করেছেন ৷ তিনি ঠাকুরের কাছ থেকে তা পেয়েছেন ৷ স্বামীজী না বললে আমরা কেউ ঠাকুরকে বুঝতে পারতাম না যে, তিনি এই তত্ত্ব প্রকাশ করতে দেহধারণ করে এসেছেন ৷ ঠাকুরকে আমরা সাধারণভাবে একজন খুব উঁচুদরের ভক্ত বা উঁচুদরের জ্ঞানী, বড়জোর একজন মহাপুরুষ ভাবতে পারতাম ৷ কিন্তু জগতে একটা পরিবর্তন এনে দিতে পারে, এমন বিপুল শক্তি যে তাঁর ভিতর দিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে—একথা স্বামীজীর সাহায্য ছাড়া আমরা কখনো বুঝতে পারতাম না ৷

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages